কিসমিস খাওয়ার নিয়ম - কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

প্রিয় পাঠক, আজকে আপনারা এমন একটি খাবার সম্পর্কে জানতে চলেছেন যা মূলত ড্রাই ফুড হিসেবে পরিচিত। তবে শরীরের জন্য এটি এতটাই উপকারী যে, যে কেউ এটি ছাড়া দিন শুরু করার কথা কল্পনাও করতে পারে না। অনেক পুষ্টিকর খাদ্যের মধ্যে একটি হল কিসমিস।
পোস্টসূচীপত্রঃআজকে আমাদের আর্টিকেলের মূল বিষয় হচ্ছে কিসমিস। আজকে আর্টিকেলের এর মাধ্যমে আপনাদেরকে কিসমিস সম্পর্কে যতটুকু তথ্য দেয়া যায় সবটুকু আপনাদের সাথে শেয়ার করব। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল।

ভূমিকা

যেকোনো ড্রাই ফুড এর মধ্যে কিসমিস অনেক সুস্বাদু একটি খাবার। ড্রাই ফুড তৈরিতে এর কোন বিকল্প নেই। শারীরিক যেকোন দুর্বলতা দূর করতে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান সরবরাহ করে থাকে।তাই কিসমিসের গুনাগুন কতটুকু তা আপনার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।

কিসমিস কি

কিসমিস কি সেটা আমরা প্রায় সবাই জানি। কিসমিস তৈরি হয় যে কোন আঙ্গুর ফল থেকে। কিসমিস কে ইংরেজিতে রেইসিন নামেও ডাকা হয়। কিসমিস আপনারা শুকনোও খেতে পারেন আবার চাইলে রান্নার উপকরণ হিসেবেও খেতে পারেন।

কিসমিস এর প্রকারভেদ

কিছু সে প্রকার ভেদ সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না। সুস্বাদু এই খাবারটি কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। নিচে কিসমিসের প্রকারভেদ উল্লেখ করা হলোঃ
  • নিয়মিত কিসমিস
  • গোল্ডেন কিসমিস
  • সবুজ কিসমিস
  • লাল কিসমিস
  • সুলতানা কিসমিস এবং
  • কারেন্ট কিসমিস

কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

কিসমিস যেহেতু একটু শুকনো ফল তাই অনেকেই এটি মুখে চাবিয়ে খেয়ে থাকে। তবে অনেকে পায়েস,সেমাই জাতীয় মিষ্টান্নতে কিসমিসের ব্যবহারে করে আরো সুস্বাদু করে তোলে। তবে কিসমিস খাওয়ার সঠিক নিয়ম হচ্ছে, রাতে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে সেটি পানিসহ খেয়ে ফেলা।

প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত

কিছুই যেহেতু অনেক সুস্বাদু ফল তাই এটি অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন। আর খাবেনি বা না কেন। কিসমিস এতটাই সুস্বাদু হয় যে অনেক বেশি পছন্দ করে। তবে তুলনায় অতিরিক্ত কিছু খাও ঠিক নয়। এতে উপকারের জায়গায় ক্ষতি হতে পারে। প্রতিদিন নিয়মিত ৩০ থেকে ৪০ গ্রাম বা ৮-১০টা কিসমিস খাওয়া উচিত।

কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

নিয়মিত কিসমিস খেলে আমাদের শারীরিকভাবে কি কি পরিবর্তন হয় বা কি কি উপকার হয় চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাকঃ

হজম শক্তি বৃদ্ধিঃ- শরীর সুস্থ রাখতে হলে শরীরের হজম শক্তি বাড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য কিসমিস খুবই উপকারী একটু উপাদান। প্রতিদিন রাতে ৮-১০টা কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে খেয়ে ফেলুন। প্রতিদিন এটি নিয়ম করে খেতে থাকুন। ১৫ দিনের মধ্যে অবশ্যই ফলাফল পেয়ে যাবেন।

ব্লাড প্রেসার পবিত্র সব কমায়ঃ- বর্তমান সময় উচ্চ রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসারের উঠানামা মানুষের জন্য খুবই সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রাকৃতিক পদ্ধতি গুলোর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কিসমিস অনেক সাহায্য করে। কারণ এর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

শরীরকে বিষমুক্ত রাখেঃ- কিসমিস এমন একটি খাদ্য যেদিন নিয়মিত খাওয়ার ফলে পুরো শরীরকে যে কোন বিষক্রিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। এখানে বিষক্রিয়া বলতে শরীরকে বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ এবং বাইরে ধুলাবালি থেকে রক্ষা করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিঃ- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে কিছু সের কোন বিকল্প নেই। যেমন পটাশিয়াম আছে তেমনি পরিমাণে অ্যান্টঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শরীরের ভেতরে বিভিন্ন রোগের সঙ্গে লড়াই করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

রক্ত স্বল্পতা দূর করতেঃ- রক্তস্বল্পদূর করতেও কিসমিস অনেক উপকারী একটি খাদ্য উপাদান। কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান। আয়রন রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই রক্তস্বল্পতা দূর করতে কিসমিস অনেক উপকারী।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ- আপনি যদি পেটের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগেন তাহলে নিয়মিত কিসিসে যেন পানি খান। যেহেতু এটিতে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় তাই নিয়মিত কিসমিস ভেজানো পানি খেলে পেটের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ও দূর হয়।

ভালো ঘুমের জন্যঃ- ঘুম ভালো না হলে তা শারীরিক ভাবে অনেকটা অসুস্থতার কারণ হতে পারে। তবে কিসমিস খাওয়ার কারণে যেহেতু কিসমিসের প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে এবং বিভিন্ন রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে তাই শারীরিকভাবে অসুস্থ সমানে অনেক কমে যায় এবং নিয়মিত ঘুম ভালো হয়।

হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতেঃ- কিসমিসে অন্য সব খাদ্য উপাদানের মত প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। ক্যালসিয়াম মানব দেহের হাড়ের গঠন ঠিক রাখতে এবং এর শক্তি বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে। তাই কিসমিস খাওয়া অনেক জরুরী।

ওজন বৃদ্ধিতেঃ- অনেকে আছেন যাদের ওজন তুলনায় অনেক কম। তাই তারা যদি নিজেদের ওজন বাড়াতে চান তাহলে কিসমিস হতে পারে প্রাকৃতিক এবং সুস্থ একটি উপাদান। কিসমিস ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ সমৃদ্ধ একটি খাবার যা আপনাকে প্রচুর পরিমাণে শক্তি জোগাতে সাহায্য করবে। শরীরের বিভিন্ন দূষিত কোলেস্টেরলকে শরীরে জমতে না দিয়ে এটি আপনাকে ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেঃ- কিসমিস ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে। কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষ, কোলাজেন ও ইলাস্টিনের ক্ষতি থেকে খারাপ উপাদানগুলোকে বাধা দেয়। যার কারণে ত্বকের বার্ধক্য জনিত ভাব বা যেকোনো দাগ থেকে রক্ষা করে।

কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

এখন আমরা জানলাম উপকারিতা সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো অপকার গুলো কি কি।
প্রত্যেকটা জিনিসেরই ভালো এবং মন্দ দিকে রয়েছে। তবে কিসমিসের তেমন খারাপ দিক না থাকলেও এর খারাপ দিক হচ্ছে এটি অতিরিক্ত না খাওয়া। কারণ এটি অতিরিক্ত খেলে শরীরের যে উপকারগুলো হয় সেগুলোই আবার অপকার হয়ে ফিরে আসে।

লেখকের মন্তব্য

আজকে আমরা আপনাদেরকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি সম্পর্কে আপনাদের কিছুটা হলেও ধারণা প্রদান করতে পেরেছি।

এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আরো বিভিন্ন বিষয় জানতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে ফলো দিয়ে রাখুন এবং আপনার পরিচিত জনের সাথে শেয়ার করুন।

ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url