শীতকালে অতিরিক্ত চুলকানির সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে জেনে নিন

বর্তমান সময়ে প্রায় সব মানুষ চুলকানির সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। প্রায় সময় এই সমস্যা বেড়ে যায়। তবে শীতকালে চুলকানি সমস্যা খুব বেশি বেড়ে যায়। তবে আপনারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন কি শীতকালে কেনো চুলকানি বেশি বেড়ে যায় ?
পোস্টসূচীপত্রঃঅনেকে মনে করতে পারেন শীতকালে কেনো চুলকানির সমস্যা বেশি হয়। এটা আসলেই ঠিক। এর কারণ হচ্ছে শীতকালে মানুষের শরীরের ত্বক খুব বেশি শুস্ক হয়ে যায়। সে কারণেই মূলত শীতকালে চুলকানির সমস্যা বেশি হয়।

ভুমিকা

শীতকালে চুলকানি বা চর্মরোগ হওয়া মানুষের জন্য নতুন কোনো বিষয় নয়। এটা খুব স্বাভাবিক। প্রায় সবারই কোনো না কোনো কারণে চুলকানির সমস্যা হয়ে থাকে। তাই আজকে আপনাদেরকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে শীতকালে চুলকানি কেনো হয় এবং এর সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।

শীতকালে চুলকানির সমস্যা

প্রায় সময়ই চুলকানির সমস্যা মানুষের অনেক বড় সমস্যা। অনেকে এই সমস্যায় থাকলেও সবাই জানেন না কিভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে, চুলকানির সমস্যা শুধুমাত্র শারীরিক সমস্যায় নয়, অতিরিক্ত এবং অসহ্য চুলকানি মানসিক সমস্যার কারণও হয়ে দাঁড়ায়।

চুলকানি এমন খারাপ একটি বিষয় যা মানুষের যেকোনো সময় যে কোনো জায়গায় লজ্জাজনক অবস্থায় পড়তে পারে।অনেকে হয়তো সব জায়গায় চুলকাতে চায় না, তবে এমনো পরিস্থিতি হয় না চুলকিয়েও থাকা যায় না। তাই এটি অনেক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

শীতকালে চুলকানি কেনো হয়

চুলকানি বা শীতকালে চুলকানি হওয়ার কোনো বড় কারণ কখনো জানা যায়নি। তবে শীতকালে যেহুতু মানুষের শরীরের ত্বক বেশি শুস্ক হয়ে যায় তাই শীতকালে মানুষের চুলকানির সমস্যা বেশি হয়। তাছাড়া অনেকের আবার এলার্জির সমস্যার কারণেও হয়ে থাকে। অনেকের আবার নানা ধরণের এলার্জি জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণেও শীতকালে চুলকানির সমস্যা অনেক বেড়ে যায়।

শীতকালে চুলকানি বেড়ে যায় কেনো

শীতকালে যেহেতু চর্মরোগ এর সমস্যা বেড়ে যায় তাই শীতকালে অনেক যত্ন সহকারে নিজেদের খেয়াল রাখা উচিৎ। শীতকালীন চুলকানি হলো একধরনের ডার্মাটাইসিস বা ত্বকের জ্বালা জনিত একটি রোগ। শীতকাল হলেও মানুষদের বাইরে যেয়ে তাদের নিজেদের দৈনন্দিন কাজ করতে হয়।

তাই বাইরে যাওয়ার ফলে মানুষের শরীরের ত্বকের শুস্কতা, ত্বকের খসখসে ভাব ও ত্বক লাল হয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। এতে মানুষের শরীরের চুলকানির সমস্যা শুরু হয়।

শীতকালে চুলকানির লক্ষণ

শীতকালে চুলকানির সমস্যা দেখা দিলে মূলত সারা শরীরটাই অসহনীয়ভাবে চুলকাতে থাকে। হাত, পা, চেহারা, মাথা অর্থাৎ চুলের নিচের চামড়া, পায়ের উরু, হাটু, পায়ের গোড়ালিসহ শরীরের সব জায়গায় অনেক চুলকায় ও জ্বালাপোড়া করবে।

গোসলের পরে বা রাতে ঘুমানোর আগে কাপড় পরিবর্তনের সময় চুলকানি আক্রান্ত স্থানে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া বেড়ে যেতে পারে। অনেক সময় চুলকানিগুলো ফুসকুড়ির মতো বের হয়ে চুলকানি বেশিও হতে পারে।

শীতকালে চুলকানির কারণ

ঠান্ডা বেশি হলেঃ ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ঠান্ডা বেশি হলে মানুষের শরীরের ত্বকের আর্দ্রতা ঠান্ডা আবহাওয়া শুষে নেয়। ফলে মানুষের চুলকানির সমস্যা বেড়ে যায় এবং অনেক শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়।

গরম পানি ব্যবহার করলেঃ শীতে পানি ব্যবহার করলে মানুষের শরীরের ত্বক শুস্ক হয়ে যায়। গরম পানি এক্ষেত্রে আরো বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। গরম পানি ব্যবহারের ফলে মানুষের শরীরের ত্বকে যে প্রাকৃতিক তৈলাক্ত ভাব থাকে সেটা দূর হয়ে মানুষের শরীরের শুস্কতা বেড়ে যায় এবং মানুষের শরীরে লালচে ভাব দেখা দেয়।

সাবান জাতীয় পদার্থ ব্যবহারঃ কিছু কিছু সাবান ত্বকের জন্য উপকারী হলেও বেশির ভাগ সাবান রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা তৈরি। তাই শীতকালে এমন সাবান ব্যবহারের ফলে পানির সাথে মিশে মানুষের শরীরের আর্দ্রতা আরো বাড়িয়ে দেয়।

তাপ প্রবাহঃ অতিরিক্ত শীতকালে অনেকে রুম হিটার নামক একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করেন। এটি ব্যবহারের ফলে শরীরে তাপ অনুভূত হয়ে মানুষের শরীরের ত্বকের শুস্কতা বেড়ে যায়।

চুলকানির সমস্যা সমাধানে করণীয়

যদিও চুলকানির সমস্যা সহজে সমাধান করা সম্ভব হয়ে ওঠে না তবে কিছু কিছু নিয়ম মেনে চললে অনেকটাই চুলকানির সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। নিচে কিছু করণীয় উল্লেখ করা হলো-
  • গোসল করার সময় হালকা গরম পানির সাথে বেকিং সোডা মিশিয়ে সে পানিতে গোসল করলে চুলকানির সমস্যা অনেক সমাধান হয়
  • গোসল করার সময় সাবান এর পরিবর্তে কোনো ক্লিনজার বা সাবানমুক্ত পণ্য ব্যবহার করুন। এতে শরীরের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায় না।
  • গোসল করার পরে অবশ্যই ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা। এতে শরীরের শুস্কতা দূর হয় এবং চুলকানি রোধে সাহায্য করে।
  • ঘন বা সুগন্ধমুক্ত কোনো ক্রিম ব্যবহার করা যাবে না।
  • অনেকে চুলকানির জন্য যেকোনো হকারদের কাছ থেকে চুলকানি দমনকারী মলম কিনে ব্যবহার করে। এটা করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কারণ এর ভিতরের রাসায়নিক পদার্থ চুলকানির জন্য আরো খারাপ হতে পারে।
  • গোসলের পর অবশ্যই হালকা বা পাতলা টাইপ সুতি বা সিল্কের জামা-কাপড় পরার চেষ্টা করুন। মোটা বা উলের কোন কাপড় পরলে আক্রান্ত স্থানের জ্বালাপোড়া বেড়ে যায়।
  • ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে নিজেকে রক্ষা করার জন্য অবশ্যই হাতে, পায়ে, মাথায় গ্লাফস ও টুপি ব্যবহার করা উচিৎ।
  • শীতকালেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিৎ।
  • প্রচুর পরিমাণে সব রকমের ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়া উচিৎ।
  • অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিৎ।

লেখকের মন্তব্য

আজকে আমরা আপনাদেরকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শীতকালে চুলকানির সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে বেশ কিছু ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি সম্পর্কে আপনাদের কিছুটা হলেও ধারণা প্রদান করতে পেরেছি।

এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আরো বিভিন্ন বিষয় জানতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে ফলো দিয়ে রাখুন এবং আপনার পরিচিত জনের সাথে শেয়ার করুন।

ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url