চাল ধোয়া পানি দিয়ে কিভাবে চুল বড় হয় বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত এমন সব জিনিস রয়েছে যেগুলোকে আমরা নিজেদের প্রয়োজনে চাইলেই কাজে লাগাতে পারি। তবে আমরা সেটা না করে সেই জিনিসগুলোকে আমরা ফেলে দেই। তাই আমাদের জানা উচিত জিনিসগুলো কি।
পোস্টসূচীপত্রঃএর মধ্যে সবচেয়ে উপকারী জিনিস হচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত চাল ধোয়া পানি। চাল ধোয়া পানি যে কতটা উপকারী সে সম্পর্কে যদি আপনি জেনে থাকেন তাহলে চাল ধোয়া পানি আপনি আর কখনো ফেলে দিবেন না। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক চাল ধোয়া পানির সম্পর্কে।
ভূমিকা
যেকোনো ধরনের শারীরিক সমস্যা দূর করতে বা শরীরকে সুস্থ সুন্দর রাখতে চাল ধোয়া পানির গুরুত্ব অনেক। অনেকেই হয়তো জানে না চাল ধোয়া পানি দিয়ে কত রকমের কাজ করা যায়। তাই আজকে আপনারা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে চাল ধোয়া পানি সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব।
চাল ধোয়া পানি
চাল ধোয়া পানি এক্সট্রা করে তৈরি করতে হয় না। ভাত রান্না করার আগে যেকোনো সাধারণ পানিতে প্রথমে একবার চালটাকে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এরপর সেই চালটাকে একটা বাটিতে আবার পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ততক্ষণ ভিজিয়ে রাখবেন যতক্ষণ না পানি ঘন এবং ফ্যাকাসে রূপ ধারণ করছে।
এরপর যেকোনো ছাকনি দিয়ে ছেকে চুলে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত করে তুলতে পারেন। এই পানি ১২ ঘন্টা পর্যন্ত আলাদা করে রাখতে হবে। এরপর এটি ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
চালের পানি মুখে দিলে কি হয়
চাল ধোয়া পানি মুখের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। কারণ চাল ধোয়া পানিতে ভিটামিন, মিনারেল ও আন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। চাল ধোয়া পানি মুখে জমে থাকা যেকোনো ধুলা ময়লা খুব দ্রুত এবং সহজে দূর করতে সহায়তা করে। তাই চাল ধোয়া পানি সংরক্ষণ করে এটি নিয়মিত ব্যবহার করা উচিত।
ত্বকের যত্নে চাল ধোয়া পানি
ত্বক মানুষের শরীর খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মানুষের শরীরের ত্বকের যত্নে চাল ধোয়া পানি অনেক উপকারী একটি উপাদান। ত্বকের উজ্জ্বলতা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কাল দোয়া পানির গুরুত্ব অপরিসীম।
চুলের যত্নে চাল ধোয়া পানি
চুলের যত্নে চাল ধোয়া পানি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এটি নিয়মিত ব্যবহারে অনেক সুফল রয়েছে। চুলের যত্নে চাল ধোয়া পানি ব্যবহার করলে যেসব উপকার পাওয়া যায় তার অংশবিশেষ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
চুলের আগা ফাটা রোধেঃ- চালের পানিতে ভিটামিন বি, সি এবং ই পরিপূর্ণভাবে বিদ্যমান রয়েছে। তাছাড়া চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে চাল ধোয়া পানি খুব দ্রুত কাজ করে। চালের পানিতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন গুলো উপস্থিত থাকার ফলে চুলের আগার ক্ষতি হওয়া ফাটা থেকে বাঁচিয়ে রাখে। তাই নিয়ম করে চাল ধোয়া পানি চুলের ব্যবহার করা উচিত।
চুলের সুস্থতা রক্ষা করতেঃ- চুলের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার ফলে চুলের যত্নে অবশ্যই চাল ধোয়া পানি ব্যবহার করা জরুরী। কারণ চাল ধোয়া পানিতে ভিটামিন, অ্যামিনো এসিড বিদ্যমান। চাল ধোয়া পানিতে থাকা নায়াসিন চুলের ফলিকলকে সব সময় সুস্থ থাকে এবং মাথার ত্বকের ভেতরে রক্ত সঞ্চালনকে বৃদ্ধি করে।
চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেঃ- গরমে হোক বা শীতে যদি চুলের উজ্জ্বলতা কোন কারনে কমে যাই তাহলে চাল ধোয়া পানি আপনার জন্য হতে পারে অনেক বড় একটি উপাদান। প্রাকৃতিক দূষণ, রোদের অতিরিক্ত তাপ বা তাপীয় বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহারে চুল নির্জীব হয়ে পড়ে। চাল ধোয়া পানি এই সমস্যাগুলোকে খুব সহজে সমাধান করে দেয়।
চুল বৃদ্ধি করায়ঃ- চুল ঘন ও শক্ত করার জন্য চাল ধোয়া পানির ব্যবহার খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ চাল ধোঁয়া পানিতে রয়েছে নায়াসিন ও ফলিক অ্যাসিড। যা চুলের খোসকে সব সময় সুরক্ষিত রাখে এবং চুলের বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া চাল ধোয়া পানিতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে।
চাল ধোয়া পানির যত উপকারিতা
চাল ধোয়া পানির উপকারিতা অনেক বেশি। কারণ এতে উপস্থিত থাকার ভিটামিন, খনিজ উপাদান আর অ্যামিনো এসিড আপনাদের শারীরিক অনেক উপকার করে। চাল ধোয়া পানির উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- চুলে ভালো করে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার ব্যবহার না করে আপনি চাইলে কন্ডিশনার এর পরিবর্তে চুলে চাল ধোয়া পানি ব্যবহার করতে পারেন। চুলের শ্যাম্পু করার পর চাল দোয়া পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। তারপর সাধারণ পানিতে আবার ধরে ফেলতে হবে।
- ত্বকে কোন রকমের এলার্জি জাতীয় সমস্যা হলে বা কোন সংক্রমণ দেখা দিলে দিনে অন্তত ২ বার ১৫ মিনিট করে চাল ধোঁয়া পানিতে গোসল করা উচিত। এতে ত্বকের অনেক সমস্যার সমাধান খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবেও চাল ধোয়া পানি ব্যবহার করা যায়। কারণ এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করে।
- চাল ধোয়া পানিতে অনেক খাদ্য উপাদান বিদ্যমান। যেমন - ভিটামিন, ৮ রকমের অ্যামিনো অ্যাসিড, আয়রন ইত্যাদি। তাই আপানি চাইলে চাল ধোয়া পানি খেতেও পারেন।
- আপনার মুখে যদি ব্রণের সমস্যা থাকে তাহলে চাল ধোয়া পানি আপনার জন্য হতে পারে খুব দ্রুত সমাধান। কোথাও ভ্রমণ উঠলে সেখানে চাল ধোয়া পানি দিয়ে তুলা লাগিয়ে রাখুন। তাহলে আপনি ব্রণের সমস্যা থেকে অতি দ্রুত মুক্তি পাবেন। তাছাড়া আপনি চাইলে চাল ধোয়া৷ পানিকে ফেসিয়াল ক্লিনজার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন।
- আপনাদেরকে প্রতিদিন বহু কাজে বাড়ির বাইরে যেতে হয়। এর ফলে রোদে শরীর অনেক জ্বালাতন করতে পারে। তাই আপনি চাইলে ফ্রিজে রাখা চাল ধোয়া পানি দিয়ে হাত মুখ পরিষ্কার করে নিতে পারেন। এতে রোদে প্রভাব থেকে এবং যে কোন এলার্জি সমস্যা থেকে খুব দ্রুত সমাধান পাবে।
- অনেক সময় আপনাদের ডায়রিয়াজনিত সমস্যা হতে পারে। আবহাওয়া পরিবর্তন বা খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম যেকোনো কারণেই ডায়রিয়ার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে চাল ধোয়া পানি ডায়রিয়া জনিত সমস্যা দূরীকরণে প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে কাজ করে। এক গ্লাস চাল ধোয়া পানি নিয়ে সেখানে সামান্য লবন মিশিয়ে খেয়ে নিতে হবে। তাহলে ধীরে ধীরে আপনি সুস্থতা লাভ করতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য
আজকে আমরা আপনাদেরকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে চাল ধোয়া পানি সম্পর্কে বেশ কিছু ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি সম্পর্কে আপনাদের কিছুটা হলেও ধারণা প্রদান করতে পেরেছি।
এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আরো বিভিন্ন বিষয় জানতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে ফলো দিয়ে রাখুন এবং আপনার পরিচিত জনের সাথে শেয়ার করুন।
ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url