ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের চিকন হওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি অতিরিক্ত মেদ বা ওজনের অধিকারী হন তাহলে আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে অতিরিক্ত মেদ বা ওজন কিভাবে কমাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পোস্টসূচীপত্রঃঅতিরিক্ত মেদ বা ওজন সমস্যা এখন প্রায় সবারই হয়ে থাকে। প্রায় সবাইকে দেখা যায় এই সমস্যায় ভুগছেন। তাই আজকে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইলো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত মেদ বা ওজন বৃদ্ধি ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই হয়ে থাকে। প্রায় সব বয়সেরই মানুষকে দেখা যায় এই সমস্যায় ভুগছেন। আসলে এটি অনেক বড় একটি সমস্যা। কারণ অতিরিক্ত মেদ বা ওজন মানুষের শরীরকে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন করে। এমন অনেক কারণ রয়েছে যার কারনে ছেলে বা মেয়ের যেকোনো বয়সেরই ব্যক্তিদেরকে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

অতিরিক্ত ওজন বা মেদ বৃদ্ধির কারণ

ওজন বা মেদ বৃদ্ধির সমস্যার কারণে অনেকে এখন শারীরিক নানা ধরনের অসুস্থতার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রত্যেকেরই সচেতন হওয়া উচিত। তবে এখন আমরা জানবো হঠাৎ অতিরিক্ত ওজন বামে বৃদ্ধি হওয়ার কারণ কি। নিচে এর বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করা হলোঃ
  • শারীরিক বিভিন্ন কার্যকলাপে বাধা সৃষ্টি হওয়ার কারণে ওজন বা মেদ বৃদ্ধি হতে পারে। এক্ষেত্রে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়া, যেকোনো ধরনের ডায়েট চার্ট ফলো করা বা হরমোনাল সমস্যার কারণে ওজন বামেদ প্রীতি হতে পারে।
  • হার্ট, কিডনি বা লিভারের বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণে হঠাৎ করে মানবদেহের ওজন বা মেদ বৃদ্ধি হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্টের হৃদ স্পন্দনে যদি বাধা প্রদান হয় বা প্রয়োজনের তুলনায় কম স্পন্দিত হয় তাহলে শরীর এক ধরনের তরল পদার্থ ধরে রাখে। এতেও শরীরের ওজন বা মেদ বৃদ্ধি পায়।
  • মেদ বা ওজন বৃদ্ধির আরেকটি কারণ হচ্ছে হাইপোথাইরয়েডিজম। এটি একটি আন্ডার একটিভ থাইরয়েড গ্রন্থি। যা মানবদেহের বিপাককে বাধা প্রদান করতে পারে বাধির করে দিতে পারে। এজন্য খাওয়া-দাওয়ার পর বিশ্রামের শরীর থেকে খুব বেশি ক্যালরি ঝরতে পারে না। জামানুদের ওজন বাড়াতে অনেক বেশি অবদান রাখে। এই সমস্যার ফলে শরীরে অনেক বেশি চর্বি জমা হয়।
  • বর্তমান সময়ে ডিজিটাল ডিভাইস এর ব্যবহারের ফলে মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। যার ফলে কেউ এখন বাইরে খুব একটা হাঁটতে বা ব্যায়াম করতে যেতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে না। যার ফলে মানুষের শরীরে অবসাদ বা স্ট্রেস এর পরিমাণ বেড়ে যায়। কারো ভেতরে প্রচন্ড স্ট্রেস কাজ করলে করটিসোল নামক এক ধরনের হরমন নির্গত হয়। এই হরমোনের ফলে ওজন বা মেদ মানবদেহে জমতে শুরু করে।
  • অতিরিক্ত মেদ বা ওজন বাড়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে প্রতিদিন ঠিকমতো নিয়ম মাফিক ঘুম না হওয়া। বর্তমান সময়ে ঘুম না হওয়া প্রায় প্রত্যেক বয়সের মানুষেরই অনেক বড় ধরনের একটি সমস্যা। ঠিকভাবে ঘুম না হলে মানব দেহের বায়োকেমিক্যালে অনেক পরিবর্তন দেখা দেয়। এর কারণেও ওজন বা মেদ বৃদ্ধি পায়।
  • প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। তবে কেউ যদি আলসেমি করে এমন অভ্যাস গড়ে তুলতে না পারে তাহলে তার মেদ বা ওজন বৃদ্ধির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • অনেকে আছে যারা অনিয়ন্ত্রিতভাবে জীবন যাপন করে। অর্থাৎ সকাল,দুপুর এবং রাতে সময় মত খাবার না খেলে বা অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া বেশি পরিমাণে করলে শরীর ওজন বা মেদ অতি দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
  • এমন অনেকে রয়েছে যাদের বংশগত সমস্যার কারণেও শুরু থেকে মেদ বা ওজন সমস্যায় ভোগেন। অর্থাৎ বংশগত কারণেও মেদ বা ওজন বেশি হতে পারে। আবার কেউ যদি বেশি পরিমাণে শারীরিক পরিশ্রম না করে তাতেও তার ওজন বৃদ্ধি পায়।
  • বর্তমান সময়ের ছেলেমেয়েরা বাড়ির খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে। অর্থাৎ যাকে আমরা ফাস্ট ফুড বলে থাকি। লেখাপড়া বা বিভিন্ন কাজের জন্য অনেকে বাইরে খাওয়া দাওয়া বেশি করেন। অর্থাৎ ফাস্টফুড বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন। যার কারণে শরীরে ওজন বা আহমেদ বৃদ্ধি পায়।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলেও মানব দেহের ওজন বা মেদ বৃদ্ধি পায়। তাই মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খাওয়াই ভালো।

অতিরিক্ত মেদ বা ওজনের ফলে যেসব রোগে ঝুঁকি বাড়ে

অতিরিক্ত মেদ বা ওজন মানবদেহকে অনেক শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন করে তোলে। যার ফলে মানবদেহে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত মেয়ের বা ওজন বৃদ্ধির ফলে যে সমস্ত রোগ হতে পারে তা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টঃ- অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ফলে মানবদেহে হাঁপানির সমস্যা দেখা দেয়। অর্থাৎ যদি কারো ওজন বৃদ্ধি পায় তাহলে তার চলাফেরা বা হাঁটাচলাতে অনেক ধরনের সমস্যা হয়। যার ফলে সেই ব্যক্তির নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। অর্থাৎ তার হাঁপানি সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তাই ওজন বৃদ্ধির ফলে হাঁপানির সমস্যা অনেক মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলাঃ- অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পেলে মানবদেহে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার বাসা বাঁধতে শুরু করতে পারে। এরমধ্যে স্তন, কোলন, কিডনি এবং অগ্নাশয়ের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ওজন বৃদ্ধি হওয়া বুঝতে পারলে অবশ্যই ওজন কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

বিষন্ন থাকাঃ- মনকে বিষন্ন রাখার ফলে অর্থাৎ মানসিক সমস্যার কারণেও ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই মানসিক সমস্যা থেকে বের করে রাখতে হবে।

ডায়াবেটিসের সমস্যাঃ- কম বয়সে হোক বা যে কোন বয়সে হোক হঠাৎ ওজন বা মেদ বৃদ্ধি পেলে মানবদেহে ডায়াবেটিসের সমস্যাও দেখা দেয়। হঠাৎ অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পেলে রক্তের সরকারের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যা শরীরকে বিভিন্ন রোগ হওয়ার দিকে নিয়ে যায়।

তাছাড়া অতিরিক্ত ওজনের ফলে মানবদেহের পুরো ভার যে পড়ে তার পায়ে। তখন কোমর বা হাটু এবং আরো বিভিন্ন জায়গার জয়েন্টের ব্যথার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আমাদের বেশ কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলে শরীরের ওজন স্বাভাবিক মাত্রায় রাখা উচিত।

ছেলে এবং মেয়ের চিকন হওয়ার সহজ উপায়

অতিরিক্ত ওজন মানে ছেলে এবং মেয়ের জন্য একটি বাড়তি ঝামেলার সম্মুখীন হওয়া। তাছাড়া নানা ধরনের অসুবিষুক্ত রয়েছে। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে শরীরের মেদ বা ওজন কমাবেন বা চিকন হবেনঃ
  • অতিরিক্ত পানি পান করা
  • নিয়মিত রোজা রাখা
  • ব্ল্যাক কফি পান করা
  • গ্রিন টি পান করা
  • কার্বোহাইড্রেট খাবার পরিহার করা
  • ফল ও শাকসবজি বেশি পরিমাণে খাওয়া
  • নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলার অভ্যাস তৈরি করা
  • আঁশযুক্ত এবং ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়া
  • নিয়মিত লেবু পানি পান করা
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর অভ্যাস তৈরি করা
  • যে কোন খাবার অধিক পরিমাণে গ্রহণ না করা
  • খাবার খাওয়ার সময় ছোট প্লেট ব্যবহার করুন
  • যে কোন খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করা
  • যোগ ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলা
  • অতিরিক্ত স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকা
  • তিন বেলা সময় মত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করা
  • প্রচুর পরিমাণে সালাদ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা
  • সুষম খাদ্য গ্রহণ করা
এ সমস্ত নিয়ম-কানুন মেনে চললে ওজন অনেকটাই আস্তে আস্তে হ্রাস পেতে থাকবে।

লেখকের মন্তব্য

আজকে আমরা আপনাদেরকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের চিকন হওয়ার উপায় সম্পর্কে বেশ কিছু ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি সম্পর্কে আপনাদের কিছুটা হলেও ধারণা প্রদান করতে পেরেছি।

এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আরো বিভিন্ন বিষয় জানতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে ফলো দিয়ে রাখুন এবং আপনার পরিচিত জনের সাথে শেয়ার করুন।

ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url