পাট উৎপাদন - পাট চাষের পদ্ধতি - পাট চাষের সময়

আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদিত হয়। তার মধ্যে পাট অনেক জনপ্রিয়। তাছাড়া পাটকে আমাদের দেশের প্রধান অর্থকরী ফসল বলা হয়। পাট মূলত বর্ষাকালে ভালো হয়। অন্য কোন ঋতুতে পাট উৎপাদন হতে দেখা যায় না। পাটকে আমাদের দেশের সোনালী আঁশ বলেও আখ্যায়িত করা হয়।
পোস্টসূচীপত্রঃকারন অতীতে পাটের ব্যাপক চাহিদা ছিল। এই পাট দেশের গন্ডী পেরিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হতো।পাট রপ্তানি করে আমরা অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতাম।বর্তমানে পাটের চাহিদা একাংশে বাইরের দেশে রপ্তানি করা অনেক কমে গেছে কারণ পাটের মধ্যে বালু মিশিয়ে পাটের ওজনের তুলনায় অনেক ভারী করা হতো।যার ফলে ক্রেতারা ভুক্তভোগীর শিকার হয় এবং বাংলাদেশী বিক্রেতাদের কাছে থেকে পাট কিনতে অনীহা দেখা যায়।

ভুমিকা

পাট উৎপাদনে আমাদের দেশের ভুমিকা অনেক।বর্তমান সময়ে সরকারও পাট উৎপাদনে কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে। পাটের পরিচিতি এবং পাট দিয়ে কি কি তৈরি করা যায় সবকিছু আমাদের আর্টিকেলে সুন্দর ভাবে বর্ণনা করা রয়েছে ।

পাটের বৈজ্ঞানিক নাম

পাটের বৈজ্ঞানিক নাম (corchorus spp)। পাট সাধারণত বর্ষাকালীন আবাদ। এর আয়ুকাল ৩-৪ মাস/১০০-১২০ দিন পর্যন্ত। পাট বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গের শত বৎসর এর ঐতিহ্যবাহী ফষল।

পাটের প্রকারভেদ

আমাদের দেশে প্রধানত তিন ধরনের পাট উৎপন্ন হয়।প্রথমত সাদা পাট, দ্বিতীয়ত তোষা পাট বা লাল পাট এবং তৃতীয়ত মেসতা পাট। আমাদের দেশে তিন ধরনের পাটের চাহিদাই অনেক বেশি। পাট Tillaceae পরিবারের অন্তর্গত কৃষিজাত উদ্ভিদ। আমাদের দেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের লোকজন পাটকে "নারিস" শাক নাম বলা হয়ে থাকে।

পাটের পরিচিত

পাট একটি বাৎসরিক ফষল। এর জীবনকাল তিন থেকে চার মাস বা ১০০ থেকে ১২০ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত বসন্তের শেষ এবং গ্রীষ্মের শুরুতে পাটের বীজ রোপন করা হয় এবং বর্ষাকালে পাট সংগ্রহ করা হয়। পাট একটি বৃষ্টি নির্ভর ফসল। ৬০% থেকে ৯০% আদ্রতায় পাট ভালো জন্মে।

পাট উৎপাদনে কোন রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার এর প্রয়োজন পড়ে না। প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় 2 টন ফলন হয়ে থাকে পাটের। পাটের আঁশ নরম দেখতে উজ্জ্বল ও চজচকে। পাট সাধারণত ১ থেকে ৪ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।

তবে একক আঁশ কোষ দুই থেকে ছয় (২-৬) মিলিমিটার লম্বা এবং ১৭ থেকে ২০ মাইক্রন মোট হয়।পাটের আঁশ প্রধানত সেলুলোজ এবং লিগনিন দ্বারা গঠিত। সাধারণত পাট গাছ জৈব প্রক্রিয়ায় পানিতে জাগ দিয়ে পাটের আঁশ ছাড়ানো হয়।

পাট উৎপাদনে সরকারের ভূমিকা

১লা মার্চ ২০২৩ প্রজ্ঞাপনের গেজেট অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথা বর্তমান সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী পাটকে কৃষিজাত পণ্য ঘেষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের জাতীয় পাট দিবস ৬ মার্চ।

সবুজে ঘেড়া আমাদের এই বাংলাদেশে পৃথিবীর প্রায় ২৪ শতাংশ পাট উৎপন্ন হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে পাট উৎপাদনের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে রংপুর,ফরিদপুর,যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চল।

জিনোম অনুক্রম

২০১০ সালের ১৬ই জুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে পাটের জিনোম অনুক্রম বা জীবনরহস্য আবিষ্কারের ঘোষণা দেন। ড. মাকসুদুল আলম পাটের জিনেম আবিষ্কারক। ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ডেটাসফ্ট সিস্টেমস বাংলাদেশ লি.।

বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে বিজ্ঞাপন পত্রিকায় প্রকাশিত খসড়া জিনোম আবিস্কার করেছে এবং এতে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় ও মালয়েশিয়া বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়।

পাটজাত দ্রব্যাদি

পাট ব্যবহার করে অনেক জিনিস উৎপন্ন করা সম্ভব হয়েছে।যেমন: দড়ি,বস্তা,ব্যাগ,কার্পেট,গৃহসজ্জার সামগ্রী,পাটি এবং কাপড় ইত্যাদি।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠকগণ, আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে আমাদের জাতীয় সম্পদ পাট সম্পর্কে বলার চেষ্টা করেছি। আশা করি এ বিষয়ে কিছুটা হলেও ধারণা প্রদান করতে পেরেছি।

এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থেকে আমাদের আর্টিকেল পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আরো বিভিন্ন খবরাখবর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করে রাখুন এবং আপনাদের পরিচিত জনের সাথে আমাদের ওয়েবসাইটটি Share করুন।

ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url