হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়া রোগের নাম হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ। করোনা ভাইরাস আতঙ্কের পর বর্তমানে আমাদের দেশে হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এর প্রকোপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই এখন এই রোগের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। এতে বাচ্চার অভিভাবকরাও অনেক বেশি চিন্তিত।
পোস্টসূচীপত্রঃকরোনা ভাইরাস প্রকোপের পর এই রোগটি মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। মূলত শিশুরাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। কক্সাকি নামক এক ধরনের ভাইরাসের কারণে এই রোগ বেশি ছড়াচ্ছে। এই রোগটি বাচ্চাদের জন্য কষ্টদায়ক তবে মারাত্মক কোনো রোগ নয়। এতে জীবনহানির ঝুকিও নেই।

ভুমিকা

আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ সম্পর্কে ভালো একটা ধারণা পাবেন। কিভাবে এর রোগ হতে পারে, এর লক্ষণগুলো কি কি, এই রোগ হলে করণীয় কি এর চিকিৎসা সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবেন। তাই এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অনুরোধ করছি

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ রোগ কি

এটি একটি ছোয়াচে এবং সংক্রমক রোগ। যুক্তরাষ্ট্রের 'সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এর তথ্য অনুসারে, এই ভাইরাসটি "এন্টেরোভাইরাস" পরিবারের সদস্য। এই ভাইরাসে যদি কেউ আক্রান্ত হয় তাহলে ২ থেকে ৬ দিনের মধ্যে এর প্রকোপ দেখা যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ মেডিসিন এর সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম শ্যাফনার বলেন, 'এই দানা গুলো ফুসকুড়ির আকার ধারণ করে এবং হাতের উল্টা পিঠ ও তালু এবং পায়ের পাতা ও পশ্চাতে এর সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়।' এই রোগটি বাচ্চাদের মাঝে স্কুল বা ডে কেয়ার এর মাধ্যমে ছড়ানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তবে তিনি আরো বলেন, ১ সপ্তাহের মধ্যে এই ভাইরাসজনিত রোগটি এমনিতেই সেরে যায়।

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ রোগ কেনো হয়

ষড়ঋতুর দেশ আমাদের বাংলাদেশ। প্রতিবছর আমাদের দেশে একটি নির্দিষ্ট সময়ে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে নানা রকমের রোগও মানুষের শরীরে বাসা বাধতে শুরু করে। একে আমরা মৌসুমি রোগ হিসেবেও বিবেচিত করতে পারি। হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এমনি একটি রোগ। এই রোগটির হঠাৎ করেই আমাদের দেশে আগমন ঘটে। এই রোগটি বিষয়ে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে যে এটা শুধু বাচ্চাদের হচ্ছে। এটি আসলে বড়দেরও হতে পারে। এটি একটি সংক্রামক রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে,হাঁচি,কাশি,ব্যবহৃত পোশাক বা স্পর্শ করা যেকোনো জিনিস, এমনকি মলের মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে।

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ ইন চিল্ড্রেন

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এই রোগটি যেহুতু সম্পূর্ণ নতুন তাই এই রোগটি নিয়ে অনেকের অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। কেউ এটিকে র‍্যাশ আবার অনেকে এটিকে চিকেন পক্সের সাথেও তুলনা করে ফেলেন। এই অসুখে মূলত মুখ,পায়ের পাতা,হাতের তালুতে ছোট ছোট র‍্যাশ বের হয়। তাছাড়া এমনটা বাচ্চার মুখের ভিতরেও হতে পারে। এর জন্য অনেক বাচ্চা খাবারও খেতে পারে না।

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এর লক্ষণ

যেহুতু এটা আমাদের দেশের জন্য একটি নতুন সংক্রমক এবং ছোয়াচে তাই এর উপসর্গগুলোও বোঝা খুব সহজ। শুরুতে হঠাৎ হালকা জ্বর এবং এর সাথে গলা ব্যাথা থাকবে।শরীরের বিভিন্ন অংশে পানিভর্তি ফুসড়ি লক্ষ্য করা যাবে। মুখের ভিতরেও ঘা এর মতো ক্ষত সৃষ্টি হবে। মুখ দিয়ে ক্রমাগত লালা নিঃসরিত হতে থাকবে তাছাড়া খাবারে অরুচি দেখা দেবে। শরীরে যে ফুসড়িগুলো দেখা যায় তা দেখতে অনেকটা জলবসন্তের মতোও অনেকে মনে করেন।

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ হলে করণীয়

রোগটির সংক্রমণ আমাদের দেশে হঠাৎ করে হু হু করে বেড়েই চলেছে। এটি যেহুতু একটি নতুন ভাইরাসজনিত রোগ তাই এই ভাইরাসের টিকা এখন পর্যন্ত উদ্ভাবন হয়নি। তবে এই রোগটি হলে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যাচ্ছে। তবুও আক্রান্তের এই কয়দিন অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিৎ। যেমন, রোগিকে অবশ্যই কম মশলা দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়াতে হবে। বাচ্চাদের হলে বাচ্চা অবশ্যই সব সময় পরিষ্কার - পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত হলে বা কোনো বাচ্চা আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে অন্য কাউকে নিয়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তাছাড়া জনসমাগম পরিত্যাগ করতে হবে।

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এর চিকিৎসা

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এর তেমন কোনো চিকিৎসা নেই সেটা আমরা আগেই জেনেছি। শুধু কিছু নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট কয়েকটা দিন চলতে হবে। এতেই আস্তে আস্তে সব অসুস্থতা সেরে যাবে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠকগণ, আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান এর ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি এ বিষয়ে কিছুটা হলেও ধারণা প্রদান করতে পেরেছি।

এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আরো বিভিন্ন বিষয় জানতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে ফলো দিয়ে রাখুন এবং আপনার পরিচিত জনের সাথে শেয়ার করুন।

ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url